বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ৭৯তম জন্মদিন ১লা জানুয়ারি রবিবার। ১৯৪৪ সালের ১লা জানুয়ারি ২০২৩ ইং কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর উপজেলা মিঠামইনের কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল হামিদ। তার বাবা হাজী মো. তায়েবউদ্দিন এবং মা তমিজা খাতুন। কামালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু।
এরপর ভৈরব কেবি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। এসএসসি পাস করেন নিকলী উপজেলার গোড়াচাঁদ হাইস্কুল থেকে। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পাস করার পর ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে কিশোরগঞ্জ বারে আইন পেশায় যোগ দেন আবদুল হামিদ।১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। উদয়াস্ত পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে অল্পদিনেই কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের একচ্ছত্র নেতায় পরিণত হন তিনি। একসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহ সান্নিধ্য লাভ করেন।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত পছন্দে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিস্তীর্ণ হাওরের দুর্গম এলাকা থেকে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তদানীন্তন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে (ময়মনসিংহ-১৮) সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ভারতের মেঘালয়ে রিক্রুটিং ক্যাম্পে এবং সে সময়ে সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (মুজিব বাহিনী) সাব-সেক্টর কমান্ডার পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ।
১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি পুনর্র্নিবাচিত হন। স্বাধীনতার পর তিনি তার নির্বাচনী এলাকা থেকে সাতবার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর চরম বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও আবদুল হামিদ তার বিশ্বাস এবং আদর্শের জায়গা থেকে তিলমাত্র বিচ্যুত হননি। এ কারণে ১৯৭৬ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয়। তবে কোনো নিপীড়নই তাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরাতে পারেনি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন। পরে তিনি একই সংসদে স্পিকারের দায়িত্ব পান। জাতীয় সংসদে সকল দলের কাছেই তিনি হয়ে ওঠেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে গেলে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদে আবারও তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর আবদুল হামিদ ২০তম রাষ্ট্রপতি হন। এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বাধীনতা পদক লাভ করেছেন তিনি।এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর ৭৯ তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষ্যে তার নিজ জেলা কিশোরগঞ্জে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
রবিবার (১লা জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এর জন্মদিন উদযাপন পরিষদ মিঠামইনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, জন্মদিনের কেক কাটা,বেলুন উড়ানো,সংক্ষিপ্ত আলোচনা,রাষ্ট্রপতির দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত,সন্ধার পর ফানুস উড়ানো, আতশবাজি ও মনোজ্ঞ সাংকৃতিক অনুষ্ঠান।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: