নিউজ ডেস্ক: গ্রামীণ সাংবাদিকতার অগ্রদূত কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার সম্পাদিত গ্রামবার্তা পত্রিকার সেই মুদ্রণযন্ত্রটি অবশেষে জাদুঘরে স্থান পেল।
কাঙ্গাল হরিনাথের ১৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) কুষ্টিয়ার কুমারখালী কাঙ্গাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরের দর্শক গ্যালারিতে স্থাপন করা ‘এমএন’ প্রেস থেকে হস্তান্তরিত মুদ্রণযন্ত্রটির উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ ।
এ বিষয়ে কাঙ্গাল স্মৃতি জাদুঘরের কর্মকর্তারা জানান, ১৯ শতকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কুন্ডুপাড়ায় কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘এমএন’ প্রেস নামক দেশের প্রথম ছাপাখানা ও মুদ্রণযন্ত্রের সাহায্যে কাঙ্গাল হরিনাথ সম্পাদিত গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা প্রকাশিত হতো। সেই ঐতিহাসিক ও দালিলিক মুদ্রণযন্ত্রটি দীর্ঘকাল অযত্ন ও অবহেলায় কাঙ্গালের বাস্তুভিটায় পড়ে ছিল। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক অমূল্য এই মুদ্রণযন্ত্রটি কাঙ্গাল হরিনাথ স্মৃতি যাদুঘরে হস্তান্তরে দুপক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়।
তারা জানান, ১৫ জুলাই জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান ও কাঙ্গাল হরিনাথের চতুর্থ বংশধরের স্ত্রী শ্রীমতি গীতা মজুমদার চুক্তিনামায় সই করেন। এরপর ১৮ জুলাই মুদ্রণযন্ত্রটি কাঙ্গাল কুঠির থেকে জাদুঘরে হস্তান্তর করা হয়। চুক্তির শর্ত মোতাবেক শ্রীমতি গীতার রানীর হাতে ২০ লাখ টাকার চেক ও পরিবারের দু’জনকে যাদুঘরে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পদে চাকরি দেওয়া হয়।
কর্মকর্তারা জানান, মেশিনের মাঝখানে এই যন্ত্রটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও উৎপাদনের তারিখ এখনো সুস্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে। লন্ডনের ১০ ফিন্সবারি স্ট্রিটের ক্লাইমার ডিক্সন অ্যান্ড কোম্পানি থেকে কলম্বিয়ান প্রেস মডেলের ১৭০৬ নম্বর এই মুদ্রণযন্ত্রটি তৈরি হয় ১৮৬৭ সালে। এটি ৩০/৩৫ মণ ওজনের দানবাকৃতির ডাবল ক্রাউন সাইজ মেশিনটি।
সাংবাদিক কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার ১৩০৩ (ইংরেজি ১৮৩৩ সাল) বাংলা সনের ৫ শ্রাবণ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কুন্ডুপাড়ায় জন্মগ্রহণকরেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করতে না পারলেও শিক্ষার প্রতি হরিনাথের বিশেষ আগ্রহ ছিল। কলকাতার বাইরে দূর মফস্বলে সংস্কৃতি চর্চার অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। কিন্তু উপার্জনের নির্দিষ্ট উৎস না থাকায় গ্রামবার্ত্তা পত্রিকা প্রকাশের জন্য তৎকালে চরম ঋণগ্রস্থ হয়ে আক্ষরিক অর্থেই তিনি কাঙাল হয়ে পড়েন। এরপরও মাসিক, পাক্ষিক ও সাপ্তাহিক হিসেবে প্রায় ২২ বছর প্রকাশিত হয়েছিল।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: