আবুল কাশেম রুমন, সিলেট প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের জুড়ীতে আলোচিত আব্দুল হামিদ কালা হত্যা মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল জলিল তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুতে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন। হার্ট অ্যাটাকে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে এই ঘটনার সময় তিনি এলাকায় ছিলেন না বলে জানান। গত (৩১ জুলাই) জুড়ীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার বড় ভাই আব্দুল হামিদ কালা একজন ঝুঁকিপূর্ণ হৃদরোগী।
মৃত্যুর আগের দিন রাতে খুব বেশি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। ঘটনার দিন বেলা আনুমানিক সাড়ে নয় টার সময়, আমাদের ছোট ভাই ফারুক আহমেদের বাটোয়ারাকৃত ও নামজারীকৃত জমিতে বর্গাচাষীর হালচাষকে কেন্দ্র করে ফারুক ও কালা ভাইয়ের মধ্যে মৌখিক বাক-বিতন্ডা হয়। উনাকে কেউ স্পর্শ পর্যন্ত করেনি। আমি তখন জুড়ি শহরে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলাম। বরং উনার ছেলে আপ্তাব উদ্দিন লম্বা দা নিয়ে দৌড়ে এসে তার চাচা ফারুক আহমদকে কোপাতে চেয়েছিল। উনার পুত্রের এহেন কান্ড দেখে তিনি হৃদরোগী মানুষ বুকে ব্যাথা অনুভব করে সড়কে বসে পড়েন। উনার স্ত্রীসহ নিকট আত্মীয় তিনজন ধরে ধরে কাছেই নিজ বাড়ীতে নিয়ে যান। এরপর উনার স্ত্রী ছালেহা বেগম উনাকে পানি পান করাইলে আব্দুল হামিদ কালা ভাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল জলিল বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে, অত্যন্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে কিছুক্ষণ পর দেখতে পাই গণমাধ্যম ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় মৃত্যু সম্পর্কে লাইভ শুরু হয়েছে। কিছু সংখ্যক কুপ্ররোচনাকারীর প্ররোচনায় পিতৃ শোকে কাতর ও দিশেহারা আমার ভাতিজা আপ্তাব উদ্দিন প্রথমেই তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে বক্তব্য মিডিয়ায় উপস্থাপন করে এবং আমি স্বয়ং জড়িত ছিলাম বলে প্রচার আরম্ভ করে। কিছু সময়ের মধ্যে জুড়ি থানার ওসি সাহেবসহ পুলিশের একটি দল তাদের বাড়িতে উপস্থিত হন এবং সিভিল ড্রেসে ৪/৫ জন লোক আমাকে কলেজ রোডস্থ জুড়ির বাসায় গিয়ে খোঁজাখুজি করেন ফলে আমি ভয়ে লাশের কাছে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হই।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আমার নিকট আত্মীয়, বোন ভগ্নিপতি ও গ্রামের সচেতন লোকজন বিষয়টি নিয়ে আমার ভারী ছালেহা বেগম ও ভাতিজা আপ্তাব উদ্দিনকে বুঝিয়ে পোস্টমর্টেম ছাড়া লাশ দাফনের ব্যবস্থা করতে এক্যমতে পৌঁছলে আমাদের আত্মীয় নয় এমন ৪/৫ জন লোক আমাদের প্রতি পরশ্রীকাতরতা বশত:, পরিবারকে কলঙ্কিত করা, মেধাশূন্য করা ও ফায়দা হাসিলের হীন মানসিকতায় আমার কচি ভাতিজা পিতৃ শোকে কাতর আপ্তার উদ্দিনকে ভুল বুঝিয়ে, কু প্ররোচনা দিয়ে লাশ নিয়ে পোস্টমর্টেমে যায় এবং ঐ দিন রাত্রেই কু প্ররোচনাকারীগণ সঙ্গে থেকে হিংসা চরিতার্থ করে মিথ্যা বানোয়াট কাহিনী সাজিয়ে জুড়ি থানায় এজাহার প্রদান পূর্বক আমিসহ ৪ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করে।
জমি জমার বিরোধের ধোয়া তুলে নানা ভাবে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার যে পায়তারা করা হয়েছে তাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল জলিল বলেন, গত ২০২১ সালে আমাদের যাবতীয় স্থাবর সম্পত্তি আমাদের তিন ভাইয়ের মধ্যে গ্রামের মুরব্বিয়ানদের সহোযোগিতায় রেজিষ্টি ও বাটোয়ারা নামা করে পৃথক করে দেয়া হয়। অথচ আজকে কিছু সংখ্যক মানুষের হিংসা ও পরশ্রীকাতরতার রোষানলে পড়ে আমি ক্ষতিগ্রস্থ ও এতিম ভাতিজাগুলো আজ দিশেহারা।
সংবাদ সম্মেলনের আব্দুল জলিল বিষয়টির প্রকৃত সত্যতা ও বাস্তবতা উপলব্দি সত্য প্রচারে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: