ছাতক প্রতিনিধি: অপহরণের ০১ মাস পর শিকল বাঁধা অবস্থায় ধানের গোলার ভিতর হতে শিশু উদ্ধার এবং অপহরণকারী ০৬ জন গ্রেফতার।
অত্র শান্তিগঞ্জ থানাধীন ৫নং দরগাপাশা ইউপির অর্ন্তগত আসামপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল গফুর এর ২য় ছেলে মোঃ ফাইজুর রহমান ওরফে ফারকুল (১৩) কে আসামপুর গ্রামের বিল্লাল আহমদের বাড়ীর সামনে ডাউকানদীর পাড় হইতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা নৌকা যোগে গত-২৫/০৮/২০২৩ইং তারিখ দুপুর অনুমান- ১১.৩০ ঘটিকায় অপরহণ করে নিয়া যায়। পরবর্তীতে ফারকুলের পিতা মোঃ আব্দুল গফুর তাহার ছেলেকে সম্ভাব্য বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করে ও তার সন্ধান না পাওয়ায় শান্তিগঞ্জ থানার সাধারন ডায়েরী নং-১৩২১, তাং-২৭/০৮/২০২৩ইং একটি নিখোঁজ ডায়েরী দায়ের করেন।
নিখোঁজ ডায়রী তদন্তকালে অপহরণকারীরা অপহৃত ফারকুল এর নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে ইমু নাম্বার ব্যবহার করে উক্ত ভিডিও ফারকুলের আত্নীয়স্বজনের ইমুতে পাঠাইয়া ০৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। তৎপ্রেক্ষিতে জনাব মোঃ খালেদ চৌধুরী, অফিসার ইনচার্জ শান্তিগঞ্জ থানা, সুনামগঞ্জ উক্ত ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে শান্তিগঞ্জ থানার মামলা নং-০৩, তাং-১২/০৯/২০২৩ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী-২০২০) এর ৭/৩০ রুজু করেন।
উক্ত ঘটনায় সুনামগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ এহ্সান শাহ্ মহোদয়ের নির্দেশে জগন্নাথপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জনাব সুভাশীষ ধর এবং অফিসার ইনচার্জ, শান্তিগঞ্জ থানা জনাব মোঃ খালেদ চৌধুরী এর তত্ত্বাবধানে ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ)/কাজল চন্দ্র দেব সহ এসআই(নিঃ)/মোহন রায়, এএসআই(নিঃ)/রুবেল আহম্মেদ ও ফোর্সের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়। উক্ত টিম গত ০১ মাস যাবৎ ভিকটিম উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতারের জন্য স্থানীয় সোর্সিং ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিরলস প্রচেষ্টা চালায়।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর থানা পুলিশের উক্ত চৌকস টিম ছদ্মবেশে অপহরণকারীদেরকে দাবীকৃত মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখাইয়া অপহরণকারী দলের সাথে যোগাযোগ করে। অপহরনকারীরা ছাতক থানাধীন একটি নির্জন হাওরের ভিতরে ছদ্মবেশদারী উক্ত পুলিশের টিমকে নিয়া মাটির রাস্তায় একটি কালভার্ট পার্শ্বে ধান ক্ষেতের আইলের মধ্যে তাহাদের দাবীকৃত টাকা রাখার জন্য বলে।
পুলিশ অনুমান সন্ধ্যা-০৬.০০ ঘটিকায় উক্ত টাকা রাখিয়া ফাঁদ পেতে ধান ক্ষেতের আইলের চার পাশে উৎপেতে শুয়ে থাকে। অনুমান রাত ০৮.৩০ ঘটিকার সময় অপহরকারী দলের আব্দুল্লাহ আল আমিন ওরফে জুনেদ (২৫), পিতা-মো: আব্দুল সালাম, সাং-হরিশ্বরণ, থানা-ছাতক, জেলা-সুনামগঞ্জ টাকা নিতে আসিলে উৎপেতে থাকা পুলিশ টিম তাহাকে আটক করে। পরবর্তীতে তাহাকে জিজ্ঞাসাবাদে তাহার দেওয়া তথ্য মতে রাতভর শান্তিগঞ্জ, সিলেট ও ছাতকের একাধিক জায়গায় অভিযান করিয়া ছাতক থানাধীন দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের ০৯নং ওয়ার্ডের হরিশ্বরণ গ্রাম হতে অদ্য- ২৫ সেপ্টেম্বর রাত-০৩.০০ ঘটিকায় অভিযান পরিচালনা করে আটককৃত জুনেদ এর বসতবাড়ীর ২য় তলার ধানের গোলায় ভিকটিম ফারকুলকে শিকল দ্বারা বাঁধা অবস্থায় শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ উদ্ধার করে এবং অপহরণকারী জুনেদ সহ ১। মো: জিয়াউর রহমান (২২), পিতা-মো:আব্দুল কাদির, ২। মো: আব্দুল সালাম (৫২), পিতা-মৃত-মদরিছ আলী, ৩। মোছা: খাদিজা বেগম (১৮), পিতা-মো: আব্দুল সালাম, সর্বসাং-হরিশ্বরণ, থানা-ছাতক, জেলা-সুনামগঞ্জ এবং উক্ত অপহরণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ৪। মো; বিলাল মিয়া (৪২) পিতা-মৃত-তৈয়ব আলী, ৫। মোছা: বেগম (৪৮), স্বামী-মোঃ বিল্লাল মিয়া, উভয়সাং-কামারখাল, থানা-জগন্নাথপুর, বর্তমানে সাং-আসামপুর, থানা-শান্তিগঞ্জ, জেলা-সুনামগঞ্জ;দের অভিযান পরিচালনা করিয়া গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ কাজ প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: