• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমিল্লায় অস্তিত্ব সংকটে খেজুরের রস সংগ্রহ যেন সোনার হরিণ 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:০০ পিএম
কুমিল্লায়
সংকটে খেজুরের রস সংগ্রহ

মশিউর রহমান সেলিম, কুমিল্লা : বছরের এই সময়ে পৌষে শীতের আগমনি বার্তায় খেঁজুর রস সংগ্রহের জন্য কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলে সবক’টি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে খেজুর গাছ রস সংগ্রহ যেন সোনার হরিণ। উপজেলাগুলোর সর্বত্রই খেঁজুরের গাছ তৈরির কাজ প্রায় শেষ হলেও শীত পড়তে শুরু করলে আগামী কিছু দিনের মধ্যে কোন কোন গাছের রস সংগ্রহ করা যাবে। এ অঞ্চলের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীণ জনপদে শুরু হয়েছে উৎসব মুখর পরিবেশ কিন্তু খেজুর গাছের সংকটে গাছিরা পড়েছেন বিপাকে। ২/৪-১০  গ্রাম ঘুরেও খেজুর গাছের সন্ধান এবং রস সংগ্রহ আগের মত পাওয়া যায় না।  

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, শরৎ, হেমন্ত কাল  শেষে চলছে শীতকাল। এ সময় মনে পড়ে মধুবৃক্ষ নামে খ্যাত খেজুর গাছের কথা। অথচ সেই খেজুর গাছ রক্ষায় স্থানীয় বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের তেমন কোন মাথা ব্যাথা না থাকায় আগামী নতুন প্রজন্মের কাছে খেজুর গাছ আর শীত মৌসুমে তার সূ-স্বাধু রস আরব্য উপন্যাশ ও ঠাকুর মার ঝুলির গল্পের মতো সোনার হরিণে পরিনত হওয়ার আশংকা করছেন অনেকেই। গত কয়েকদিনে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা দক্ষিণের উপজেলাগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট-বড় বিভিন্ন রকমের খেঁজুরের গাছ ঝুঁকি নিয়ে গাছিরা খেজুর গাছের তোলা কাটা শেষ করেছে। কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছ ঝুলে ঝুলে রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা। পেশাদার গাছিদের তেমন কোন সমস্যা না হলেও রস সংগ্রহের জন্য স্থানীয় এক শ্রেণীর উৎসুক মানুষও পিছিয়ে নেই। তারা দুঃসাহসিকতা শক্তি নিয়ে গাছে উঠা-নামা করেছে রস সংগ্রহের জন্য। আশ্বিনের শুরুতেই গাছের তোলা ও পরিচর্যা করা শূরু করেছেন গাছিরা। শীত তেমন না পড়ায় পৌষ মাসে রস সংগ্রহ করতে পারছে না তারা। তবে মাঘের শুরুতে শীত শুরু হওয়ায় লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। খেজুর রস সংগ্রহে কিছুটা আশাবাদী গাছিরা। যদিও উপজেলাগুলোতে খেজুর গাছের সংকট রয়েছে তারপরও পৈত্রিক পেশা হিসাবে গাছিরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে এ কাজ করছেন।  

সূত্রগুলো আরও জানায়, জেলার দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, সদর দক্ষিণ, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় গ্রাম্য মাঠে এবং সড়কের পাশে পথের ধারে রয়েছে প্রচুর খেঁজুর গাছ। 

এছাড়া মাঠের বিভিন্ন আইলে এবং ক্ষেতের মাঝে ও খেঁজুর গাছ দেখা যায়। খেজুর রস সংগ্রহ করে (আমন ধান) নতুন ধানের পিঠা, পুলি ও পায়েশ তৈরীর ধুম পড়বে গ্রামে গ্রামে। তাছাড়া খেজুরের গুড় দিয়ে মুড়ির মোয়া, চিড়ার মোয়া ও মুড়ি খাওয়ার জন্য কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের কাছে শীতের মৌসুমে এ রস দিয়ে হরেক রকম খাবার অতি প্রিয় হয়ে উঠে। গাছিরা ওইসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে এ অঞ্চলের অলিগলিতে  প্রতি কলস ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করবেন বলে গাছিরা জানায়। 

উপজেলাগুলোর বিভিন্ন গ্রামের গাছি সেলিম মিয়া, জামাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, সামছুল ইসলাম ও গনি মিয়া জানান, গাছ কাটার কাজ কষ্টের হলেও রস সংগ্রহে মজা রয়েছে। আমরা রস বিক্রি করে পোলাপাইন নিয়া গত কয়েক বছর ধরে মোটামুটি ভালোই আছি। তবে শীতের তীব্রতা বাড়লে খেঁজুর রস আরও বেশি মিষ্টি হবে ও রস বেশি পাওয়া যাবে। 

স্থানীয় পরিবেশবীদদের একাধিক সুত্র জানায়, স্থানীয় বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের পকেট বানিজ্য ও নানাহ ভ্রান্ত নিতির স্বীকার হয়ে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সড়কে কাটা পড়েছে পরিবেশ বান্ধব হরেক রকম গাছ। নানাহ ভাবে মরে দাড়িয়ে থাকা হাজার-হাজার পরিবেশ বান্ধব গাছগুলো দেখলে বুঝা যায় ওই বিভাগের অস্তিত্বআজ কত বড় মারত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে এলকার পরিবেশের পরমবন্ধু নানাহ রকম গাছগুলোকে হত্যার দায় নিতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা। তাদের দায়িত্বহীনতা যেন নোংরা রাজনীতির চেয়ে আরো নোংরা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তর কর্মকর্তাদের মুঠো ফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image