নিজস্ব প্রতিবেদক : ঐতিহ্যবাহী শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কচি-কাঁচা মিলনায়তনে এক আনন্দ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার। স্মৃতিচারণ ও আলোচনা পর্বে অংশ নেন মেলার সভাপতি ড. রওশন আরা ফিরোজ ও মেলার সহ-সভাপতি খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, শিশুবক্তা নুসাইবা নূর স্পৃহা, মেলার পক্ষে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার তরুণ সদস্য নিশাত শারমিন নিশি এবং সভাপতিত্ব করেন শিশু সদস্য মো: ফিয়াদ হাসান আরিহান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথী সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার বলেন, আজকের এই শিশুদের অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আনন্দিত। তোমরা জানো আমি একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারী শিশু সংস্থার সাথে যুক্ত। যা দুইজন সাহসী মহিলা যুক্তরাষ্টের এগল্যান্টাইন জেব, ডরোথি বাক্সটন (দুই বোন) ১৯১৯ সালে শুরু করেছিল। যারা বিত্তবানদের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে অবহেলিত শিশুদেরকে শিক্ষাসহ জীবন মান উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচীর সাথে যুক্ত রয়েছে। এই শিশুদের মাঝে আমি আগামীর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গৌরবজ্জল বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছি। এই শিশুদের মাঝ থেকে বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও প্রতিশ্রুতিশীল সমাজকর্মী জন্ম নিবে। যারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নক্ষত্র আকারে দ্রুতি ছড়াবে। এখানে আগত শিশু-কিশোররা অন্যান্য খেলা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দাবা খেলার সাথে যুক্ত হতে পারে, যা তোমাদেরকে মেধাবী ও চিন্তা শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, তোমরা হয়তো জানো, আমি যখন তোমাদের মতো ছোট্ট ছিলাম তখন থেকে পেশাদার দাবা খেলার সাখে যুক্ত ছিলাম। আমি আট বছর বয়সে একটি প্রতিযোগিতায় দাবা খেলায় বাংলাদেশের রানী হিসেবে খ্যাত মহিলা দাবারু রানী হামিদকে হারিয়েছিলাম।
অনুষ্ঠানের কচি-কাঁচার সভাপতি ড. রওশন আরা ফিরোজ বলেন, আজকে থেকে ৬৮টি বছর পূর্বে কবি বেগম সুফিয়া কামালের ধানমন্ডি বাড়িতে বিজ্ঞানী আব্দুল্লাহ আল মতির সভাপতিত্বে মেলার যাত্রা শুরু। তৎকালীন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীরা একত্রে কাজ করার পরিবেশ ছিল না। আমরা সামাজিক প্রতিকূলতাকে ভেঙ্গে একটি নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম। রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইসহ কমিটির অন্যান্যরা তখন ভেবেছিল এদেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও মানুষের মেল বন্ধন গড়ে তুলতে হবে এবং এদেশের উন্নয়নসহ সমস্ত পরিকল্পনা এদেশের মানুষ করবে। আমরা বিদেশী সংস্কৃতি ভাষা ও তাদের নেতৃত্বের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকবে। একদিন আমরা পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত স্বদেশ গড়ব।
তিনি আরও বলেন, কচি-কাঁচার মেলা থেকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যুবক তরুনরা পররর্তীতে স্বাধীকার আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধসহ মুক্ত স্বাধীন দেশ গড়ে তোলার অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। দেশ আজ একটি সন্ধিক্ষণে উপনীত। আমাদের চিন্তা চেতনাকে কাজে লাগিয়ে অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ শক্তি পারে যেকোনো অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে। আজকে উপস্থিত কচিঁ কাঁচারাই আগামী দিনের আমাদেরকে শিকড়ের সন্ধান দেখাবে।
অনুষ্ঠানে ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আযোজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার অংশগ্রহনকারীদের নাম ঘোষণা ও তাদের ক্রেস্টসহ সনদপত্র বিতরণ করা হয়। রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই রচিত আবৃত্তি 'গ' বিভাগের প্রথম স্থান অধিকার করেছে রুহামা তাহসীন।
আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী শেষে মেলার ভাই-বোনদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: